নিত্যপণ্যের চড়া দাম নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় ব্যর্থতার জন্য জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। খোদ শিল্প প্রতিমন্ত্রীও কিছুদিন আগে ‘মানুষ বাজার করতে গিয়ে এখন কাঁদছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এবার জাতীয় সংসদেও বিষয়টি নিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিরোধীদলীয় সংসদ-সদস্যরা তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, সিন্ডিকেটের কেউ সরকারের ভেতর থাকলে তাকে খুঁজে বের করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এমনকি মন্ত্রীর সঙ্গে সিন্ডিকেটের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা, সে ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। একজন সংসদ-সদস্য তো মন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন।
জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনতে গেলে যে ক্রাইসিস তৈরি হবে, সেটা আমাদের সইতে কষ্ট হবে; তাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এমন মন্তব্য আসা দুঃখজনক। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা। সেক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যরে কাছে এমন আত্মসমর্পণ কাঙ্ক্ষিত নয়।
সংসদে মন্ত্রী আবারও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ডিম, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধির দায় তিনি অন্য মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপিয়েছেন। অথচ বাজারে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণের দায় মূলত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরই বর্তায়। আমরা জানি, সাধারণত পণ্যের সংকট থাকলে দাম বাড়ে। কিন্তু দেশে খাদ্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। উলটো দেখা যাচ্ছে-চাল, ডাল, আটা-ময়দা, ভোজ্যতেল, মাছ-মাংস, ডিম, মসলাসহ সব নিত্যপণ্যই বিক্রি হচ্ছে চড়া দরে। কিন্তু এসব পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে যাদের কাজ করার কথা, তারাই জুজুর ভয় দেখিয়ে খরচে রাশ টানার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাহলে মানুষ অভিযোগ করবে কার কাছে?
অতিমুনাফার জন্য অনৈতিক ও বেআইনিভাবে দাম বাড়িয়ে মানুষের পকেট কাটা স্পষ্টতই অপরাধ। যারা এ অপরাধ করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা কি এতই কঠিন? উল্লেখ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের আইন আছে। অনিয়ম হলে লাইসেন্স বাতিলের এখতিয়ারও সরকারের রয়েছে। আমরা মনে করি, বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। খাদ্যপণ্যের দামের কারসাজি রোধে সরকারকে তাই কঠোর হতেই হবে। যেসব অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে, বাজারে প্রকৃত তদারকির মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com