বাকেরগঞ্জ সংবাদদাতা:
সারা দেশে গৃহহীন-ভূমিহীনদের মতো বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের প্রথম ধাপে ১৭০ টি ঘর পেয়েছেন উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে বাকেরগঞ্জ ৪ নং দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠি ৮ নং ওয়ার্ডে ১২ টি ঘর পেয়েছে গৃহহীন পরিবার।
পান্ডব নদীর জোয়ার ও বৃষ্টির পানি জমে নিচু জায়গায় নির্মিত ঘরগুলোর মধ্যে প্রবেশ করেছে পানি। ঘরের মধ্যে প্রায় ৩/৪ ফুট পানি ঢুকে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব ঘরের মানুষ।
রবিবার (১৪ আগস্ট) সরেজমিনে উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের শ্রীমন্ত নদীর চর, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের শ্রীমন্ত নদীর চর, দুধল ইউনিয়নের পান্ডব নদীর চর, ও কবাই ইউনিয়নের পান্ডব নদীর চর ঘুরে দেখা যায় রাস্তা থেকে প্রায় ৫-৬ ফুট নিচু জায়গায় ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
নদীর চরে ভেরি বাঁধ না থাকায় জোয়ার ভাটায় পানি ও বৃষ্টিতে সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। ভেলায় চড়ে যাতায়াত করছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বাসিন্দারা।
জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে বর্ষা মৌসুমে একই চিত্র দেখা গেছে। মাসের পর মাস পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে কয়েকশত পরিবার। সাপসহ পোকামাকড়ের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের। পানি ঠেকাতে প্রশাসন কিছু বালু ফেললেও,কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
দুধল আশ্রয়ণে বসবাসরত কবির খান অভিযোগ করে বলেন, ঢাকায় অটোরিকশা চালিয়ে ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে পরিবার নিয়ে ফিরে আসেন বাকেরগঞ্জের সুন্দরকাঠি আশ্রয়ণ প্রকল্পে। শেষ জীবনে পাকা ঘরে থাকার সাধ, এখন গলার কাঁটা হয়েছে তার। ঘরের ভেতর হাটু পানিতে নাকাল জীবন। দেবে গেছে মেঝেও। ফাটল ধরেছে দেয়ালগুলো।
ভরপাশা আশ্রয়ণে বসবাসরত মামুন হাওলাদার জানান, ইউনিয়নের শ্রীমন্ত নদীর চরে থাকা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের গলার কাঁটা হয়েছে উপহারের ঘর। নদীর চরে মধ্যে হওয়ায় পানিতে হাবুডুবু খেতে হয় তাদের। নেই রান্না করার মতো শুকনো জায়গাও। দুইদিন শুধু শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি। শিশুদের জীবন চরম ঝুঁকিতে আক্রান্ত হয়েছে নানান রোগে। যেকোনো সময়ে পানিতে ডুবে গিয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে।
উপজেলায় আশ্রয়ণে বসবাসরতরা জানান, এমন দূর্ভোগ পরিস্থিতিতেও প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কেউ খোঁজ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। আমরা এখন পরিবার নিয়ে পানি বন্দি হয়ে পরেছি আমাদের দেখার কেউ নেই। কয়েকমাস আগে আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতে কিছু বালু ফেলা হলেও,তা পর্যাপ্ত নয়। টেকসই ভেরি বাঁধ নির্মাণ করে তাদের আশ্রয়ণে বসবাসের পরিবেশ করে দেয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, দক্ষিণ অঞ্চলের নিম্ন অঞ্চল সাগরের লঘুচাপ ও পূর্নিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয়ণ সহ পানি বন্দি মানুষে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com