দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে গিয়ে বেশিরভাগ শিক্ষককে (চিকিৎসক) অনুপস্থিত পেয়েছেন। পরে অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিনের কাছে চিকিৎসকদের গত এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরা রিপোর্ট দেখতে চাইলে অধ্যক্ষ দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অধ্যক্ষের বাদানুবাদ হয়েছে।
সকাল ৮টায় কর্মস্থলে হাজিরার কথা থাকলেও বরিশাল মেডিকেল কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষক ১০টার পরে কর্মস্থলে যান। তাঁরা রাত ২-৩টা পর্যন্ত প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন। বিশেষ করে নিউরোলজি মেডিসিনের ডা. অমিতাভ সরকার ও আনোয়ার হোসেন বাবলুর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় দুদক কর্মকর্তারা গত রোববার মেডিকেল কলেজে অভিযান চালান। এ দিনও এই দুই চিকিৎসককে সকাল সাড়ে ৯টায় কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার বরিশাল দুদকের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল সকাল ৯টার দিকে প্রথমে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। দলের সদস্যরা বহির্বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে পরিচালকের কক্ষে গিয়ে বসেন। সেখান থেকে সকাল সোয়া ৯টায় যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামানের কার্যালয়ে। তখন তিনি কক্ষে ছিলেন না। দুদক দল আসার খবর পেয়ে তিনি তড়িঘড়ি করে কার্যালয়ে পৌঁছান। তাঁর কাছে গত এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরা রিপোর্ট চাইলে দিতে অস্বীকার করে তিনি দুদক টিমের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দুদক টিমের ছবি তুলে রাখার হুমকি দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। তখন দুদকের এক কর্মকর্তা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয় দিলে অধ্যক্ষ পাল্টা বলেন, 'আমি উড়ে এসেছি নাকি?'
এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা একে একে অধ্যক্ষের কক্ষে আসা শুরু করেন। তাঁরা সকাল ১০টার দিকে হাজিরা দেন অধ্যক্ষের কক্ষে। সাড়ে ১০টার দিকে দুদক টিম মেডিকেল কলেজ ত্যাগ করে।
অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, দুদক কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তাঁকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বলে কটাক্ষ করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ দাবি করেন, দুদকের এক সদস্যকে একজন চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ জন্য তাঁরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কলেজে এসেছেন। এ ঘটনার পর তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মহাপরিচালক তাঁকে জানিয়েছেন, আগে না জানিয়ে দুদক এভাবে আসতে পারে না এবং তাদের হাজিরা দেখার এখতিয়ার নেই। বিষয়টি নিয়ে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অনেক চিকিৎসক দেরিতে আসার কথা স্বীকার করে অধ্যক্ষ বলেন, নির্ধারিত অফিস সময়ের পরও অনেক চিকিৎসককে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com