নূরে আলম জিকু : বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশ আজ। বেলা ১১টায় শুরু হবে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা। ইতিমধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ বঙ্গবন্ধু উদ্যান। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। অনেকের গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বরিশালের প্রবেশপথ।
এ সময় সেসব গাড়িতে থাকা কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, আমাদের সমাবেশগুলোতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ সরকারকে ভীত করেছে। জোয়ার আটকাতে না পেরে সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ দিয়ে বাধার সৃষ্টি করছে, কাপুরুষের মতো রাতের আধারে গাড়িবহরে চোরাগোপ্তা হামলা করে পালিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের নেতাকর্মীদের মনে ভীতি সঞ্চারের অপচেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা দমে যাবার পাত্র নই। সব বাধা মোকাবিলা করে ঠিকই সমাবেশস্থলে এগিয়ে যাচ্ছি। যত হামলাই করুক না কেন, কোনো বাধাই এবার বিএনপি নেতাকর্মীদের দমাতে পারবে না।
এর আগে বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রলার ও বালবাহী জাহাজ-বাল্কহেড শুক্রবার মধ্যরাতেও নগরীতে প্রবেশ করতে দেখা যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের। রাতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে তুলে পৌছান দলটির নেতা কর্মীরা।
বরিশাল সমাবেশের তিনদিন পূর্বে এসেছেন ভোলা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রদল সভাপতি আরাফাত রহমান সুজন। তিনি জানান, সমাবেশের পূর্বে সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয়ার কারণে আমরা তিন দিন পূর্বেই বরিশালে চলে এসেছি। কিন্তু তারপরেও পথে পথে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এটা সাধারণ মানুষ মেনে নিতে পারছে না। খেটে খাওয়া মানুষ বলে খুবই কষ্ট দিন কাটাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে যাতে বের হওয়া যায় এবং বেগম খালেদা জিয়া নিঃশর্ত মুক্তি পায় ও তারেক রহমান যাতে দেশে ফিরে আসতে পারে এজন্য দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যই এত কষ্টের পরেও সমাবেশে উপস্থিত।
বরিশালের আগুনঝরা উপজেলা থেকে এসেছেন বিএনপির সমর্থক কবির ফকির। তিনি বলেন, পূর্ব থেকে ঘোষণা করা হয়েছে সকল ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। এজন্য আমরা তিনদিন পূর্বে চলে এসেছি। পথে পথে নানান ধরনের বাজার সম্মুখীন হতে হয়েছে, তারপরও এসব বাধা অতিক্রম করে বিকল্প পথে বরিশাল নগরে এসেছি। আমি কোন রাজনীতি করি না। কিন্তু বিএনপি'র সমর্থক হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন জেল খাটতে হয়েছে। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু এখন আমাদেরকে রাজাকারের সন্তান বানানো হচ্ছে। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আমরা ব্যালটের মাধ্যমে একটা ভোট দিতে চাই। সেই ভোটটা যেন আমরা নিরপেক্ষভাবে দিতে পারি। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই; আমাদের আর কোন দাবি নেই।
সমাবেশে এসেছেন ভোলার দৌলতখান থানা বিএনপি'র সিনিয়র সদস্য হারুন খান মাসুদ। তিনি জানান, যানবাহন লঞ্চ বন্ধ থাকবে এজন্য সমাবেশে তিন দিন আগে চলে এসেছি। তারপরেও প্রত্যেকটি ব্রীজের গোড়ায় গোড়ায় লাঠি নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা দাঁড়িয়ে ছিল। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দল ছিল তখন ১৭৩ দিন হরতাল পালন করেছিল। কিন্তু তার সাথে তো এরকম আচরণ করা হয়নি। বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসতে পথে পথে নেতাকর্মীদের নানান ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, বাধা দেয়া হচ্ছে। সমাবেশ সফল করে বাড়ি ফিরব। এই দানব সরকারের হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করব।
খুলনা, রংপুরের সমাবেশের মতো বরিশালের সমাবেশেও চিড়া, মুড়ি, চাল, ডালসহ মাঠে পৌঁচ্ছেছেন তারা। ভোলা, চরফ্যাশন, মনপুরা, পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পথে পথে বাধা উপেক্ষা করে আসেন এসব মানুষ।
চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিম হত্যার প্রতিবাদে বিভাগীয় শহরে এ কর্মসূচি হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com