বিসিসির নিরাপত্তাকর্মীরা ১৫টি ছাগল ট্রাকে করে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় বিসিসির গ্যারেজে নিয়ে আটকে রাখেনবিসিসির নিরাপত্তাকর্মীরা ১৫টি ছাগল ট্রাকে করে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় বিসিসির গ্যারেজে নিয়ে আটকে রাখেন
দেশের পশু আইনেরও তোয়াক্কা করছে না বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। কবরস্থানের গাছ খাওয়ার অভিযোগে ১৫টি ছাগলকে সিটি করপোরেশনের গ্যারেজে ৬৩ দিন ধরে বন্দি রাখা হয়েছে।
আটকে রাখা অবস্থায় দুটি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে একটি ছাগল। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে ছাগলগুলো ছাড়িয়ে নিতে বললেও পরবর্তীতে আর ফেরত দেননি।
ছাগলগুলোর মালিক নগরীর মুসলিম গোরস্থান এলাকার বাসিন্দা রাজীব শাহরিয়ার। এরই মধ্যে কয়েকবার ছাগলগুলো ফেরত চেয়ে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন রাজীবের বোন শাহীনা আজমীন। এরপরও কোনও সমাধান মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজীব শাহরিয়ার বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী। প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী হওয়ায় ছাগলগুলো ফেরত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রাজীবের।
রাজিব শাহরিয়ার বলেন, ‘আমার পৈতৃক জমি দখলের পাঁয়তারা করছে একটি মহল। জমি রক্ষায় সেখানে ২১টি ছাগল কিনে ফার্ম করেছি। ছাগল রাখার জন্য শক্ত বেড়া দিয়েছি। এজন্য চার জন কর্মচারী রেখেছি। তারাই ছাগলগুলো দেখভাল করেছিল। মাঝেমধ্যে গেট খোলা থাকায় ছাগলগুলো বের হয়ে কবরস্থানে চলে যেতো। গত ৬ ডিসেম্বর ১৫টি ছাগল কবরস্থানে ঢুকলে বিসিসির নিরাপত্তাকর্মীরা ১৫টি ছাগল ট্রাকে করে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় বিসিসির গ্যারেজে নিয়ে আটকে রাখেন। সেখানে থাকা অবস্থায় একটি ছাগল বাচ্চা দিয়েছে। সপ্তাহে দুদিন ছাগল দেখতে দেওয়া হয়। কিন্তু বারবার আবেদন করেও আজ পর্যন্ত ছাগলগুলো ফেরত পাইনি।’
রাজিব আরও বলেন, ‘বাধ্য হয়ে আমার বোন বিসিসির নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ছাগল ছেড়ে দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেন। তাতেও কাজ হয়নি। পরে পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপে বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং মুচলেকা দেওয়ার জন্য গত ১৪ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনে যেতে বলেন। যাওয়ার পর প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার মুচলেকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলেন। মুচলেকায় স্বাক্ষর দেওয়ার আগে আমার বোন তার আইনজীবীকে দেখানোর জন্য একটি কপি চান। কিন্তু কপি দিতে রাজি হননি প্রশাসনিক কর্মকর্তা। এজন্য বিষয়টি আজও সমাধান হয়নি।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল আমিন বলেন, ‘আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ যেখান থেকে পশু আটক করবে সেখানকার লোকজনকে অবহিত করবেন। এরপর সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু এতদিন পশুগুলো আটকে রাখা বেআইনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘১৫টি ছাগল ওই সময় আটকে রাখার কথা শুনলেও বর্তমান অবস্থা আমার জানা নেই। ছাগলগুলো কোথায় রেখেছেন, তা বিসিসির নিরাপত্তাকর্মীরা জানেন। বর্তমানে ঢাকায় আছি। বরিশালে ফিরে আগামী রবিবার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবো।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com