বরিশাল খবর :
হঠাৎ করেই নগরীতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। গত একসপ্তাহ ধরে নগরী ডিলার এবং খুচরা দোকানে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর গ্যাস সংকটের খবরে নগরজুড়ে বেশ হঁইচই পড়ে যায়। গৃহস্থলি এবং খাবার হোটেল মালিকরা সংকটের ভয়ে গ্যাসের আগাম মজুদ করতেও দেখা গেছে।
সংকটের কাথা স্বীকার করেছেন নগরীর বিভিন্ন এলপি গ্যাসের ডিলার এবং খুচড়া ব্যবসায়ীরা। তবে সাময়িক এই সংকট আজ বুধবার সন্ধ্যার মধ্যেই সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন গ্যাসের ডিলাররা। এনিয়ে কাউকে হতাশ না হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা ব্যাংকার আফজাল হোসেন মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে নগরীর চৌমাথা বাজার এলাকায় বিভিন্ন গ্যাস বিক্রির দোকানের সামনে ঘুরতে দেখা যায়। তিনি দোকানে দোকানে গিয়ে জানতে চান গ্যাস সংকটের তথ্য। এসময় তিনি গ্যাসভর্তি লাফ্স কোম্পানির একটি নতুন সিলিন্ডার কিনে নেন।
আলাপকালে ব্যাংকার আফজাল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সকালে অফিসে এসে সহকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি গ্যাসের নাকি সংকট দেখা দিয়েছি। তারা কয়েক জায়গায় ঘুরে গ্যাস সংগ্রহ করেছেন। বর্তমানে কোম্পানিগুলো ব্যবসায়ীক পর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ দিতে পারছে না। এ খবর শুনে অফিস থেকে বের হয়ে গ্যাসভর্তি একটি সিলিন্ডার কিনে নিলাম। রিক্সা নিয়ে লাভকি। মজুত থাকলে কাজে আসবে। তাছাড়া সহকর্মীদের কথার সত্যতাও পেয়েছি। অনেক ব্যবসায়ীই বলছে গ্যাসের সংকট আছে।
এদিকে, নগরীর বান্দ রোড এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, ‘দোকান থেকে বলছে গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। এ মাসে গ্যাস আর নাও পেতে পারেন। যেহেতি আমাদের হোটেলে গ্যাসে রান্না হয় তাই আগাম ৪৫ কেজি’র দুটি সিলিন্ডার এনে রেখেছি। যেহেতু কোম্পানির লোকেরাই বলছে তাই বিশ্বাস না করে উপায় কি?
তবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার গ্যাস ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, ‘সংকেটর তথ্য কিছুটা সঠিক। আমাদের যেপরিমাণ চাহিদা সে অনুযায়ী গ্যাস পাচ্ছি না। তবে বড় কোম্পানিগুলোর গ্যাসের সংকট নেই। আমাদের যে নিয়মিত কাস্টমার আছে তাদের মধ্যে অনেকেই এই বিষয়ে আমাকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। আমি সবাইকেই জানিয়েছি এটা বড় কোন সমস্যা নয়।
এ প্রসঙ্গে নগরীর শীতলাখোলার মোড় এলাকার মেসার্স বরকত ট্রেডার্সের মালিক লাফ্স গ্যাস বাংলাদেশে লিমিটেড এর বরিশাল জেলার ডিলার মো. রবিউল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘সপ্তাহখানেক ধরে আমাদের কোম্পানির গ্যাসের সংকট থাকার তথ্য সঠিক।
তবে এটা ততো বড় বিষয় না। সংকট মানে একেবারেই নেই, তেমনটা না। চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছি না। এটা শুধুমাত্র আমাদের কোম্পানিরই নয়, প্রায় সকল কোম্পানির গ্যাসেরই কিছুটা সংকট রয়েছে। তবে এই সংকট থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে গ্যাসের জাহাজ আসতে দেরী করছে। যে সময় আসার কথা সেই সময়ে বন্দরে এসে পৌঁছাতে না পারায় গ্যাসের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর গ্যাসের চালান দেরীতে আসার নেপথ্যের কারণ ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। কোম্পানি যেসময়ে এলসি করেছে সেই সময় যে মূল্য ছিলো, তার থেকে পরবর্তীতে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যাটার সৃষ্টি হয়েছে। তবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বা অবৈধ মজুদের কোন তথ্য থাকলে সেটা ভিত্তিহীন। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com