এই আদেশের ফলে কামালের মুক্তিতে আর ‘বাধা থাকল না’ বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আদালতে আহসান হাবিব কামালের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী। দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফারহান।
এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী পরে বলেন, “রায়ের পর থেকে তিনি সাত মাস ধরে জেলে আছেন। তিনি অসুস্থ। তাছাড়া এ মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক সময়ে তিনি আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিয়েছেন এবং জামিনের অপব্যবহার করেননি।
“আর এ মামলায় দণ্ডিত বাকি চার আসামির মধ্যে ঠিকাদার জাকির হোসেন ছাড়া বাকিরা জামিনে আছেন। এসব যুক্তি তুলে ধরে জামিন চাওয়া হয়েছিল। আদালত তাকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। এখন তার কারামুক্তিতে আপাতত কোনো বাধা দেখছি না।”
পৌর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত দেখিয়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থার জাল প্যাড তৈরি, ভুয়া দরপত্র আহ্বান; ভুয়া ঠিকাদার নিয়োগ ও প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল বাসেদ।
এজাহারে বলা হয়, ১৯৯৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে আসামিরা ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন।
ওই সময় আহসান হাবিব কামাল বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্বও পালন করেন।
তদন্তের পর ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আহসান হাবিব কামাল, সিটি করপোরেশনের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও ওই সময়ের সহকারী প্রকৌশলী খান মো. নূরুল ইসলাম, ওই সময়ের পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসাহাক, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সত্তার ও ঠিকাদার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত বছর ২০ নভেম্বর বরিশালের বিভাগীয় বিশেষ জজ মো. মহসিনুল হক পাঁচ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন।
সেই সঙ্গে আহসান হাবিব কামাল ও জাকির হোসেনকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয় রায়ে।
রায় ঘোষণার পর আসামিদের বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করলে গত বছর ৩০ নভেম্বর হাই কোর্ট আপিল গ্রহণ করে আর্থিক দণ্ড স্থগিত করে। এরপর গত ১৫ মার্চ কামাল জামিন চাইলে আদালত শুনানির জন্য ৬ এপ্রিল তারিখ রাখে।
কিন্তু মহামারীর কারণে আদালত বন্ধ থাকায় তখন শুনানি। মঙ্গলবার সে আবেদনের ওপর শুনানি শেষে জামিন আদেশ দিল হাই কোর্ট।