মামুনুর রশীদ নোমানী: সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত দর্শনীয় স্থানগুলো উপভোগ করতে পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। মনকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি এখানে দিগন্ত জোড়া আকাশ ছুয়েছে সমুদ্রের রাশি রাশি নীল জল। ফুঁসে উঠা সমুদ্র জলের তরঙ্গায়িত ঢেউ কাঁচভাঙ্গা ঝন ঝন শব্দে সৈকত বক্ষে আছড়ে পড়ছে। সাদা সাদা গাংচিলের দল উড়ে যাচ্ছে এদিক ওদিক মৎস্য শিকারি লড়াকু জেলে ট্রলার নিয়ে সমুদ্রের গভীর থেকে গভীরে ছুটছে রূপালী ইলিশ শিকারে। কুয়াকাটায় শুধু সমুদ্র সৈকতই নয়, এখানে দেখার মতো আছে আরো অনেক জায়গা। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বৌদ্ধ মন্দির ও মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধবিহার, নারিকেল কুঞ্জ বীথি ও ঝাউবন, গঙ্গামতির চর, লেমুর চর, ফাতরার চর, শুঁটকি পল্লী, রাখাইনদের প্রাচীন কুয়া, রাখাইন জীবন বৈচিত্র্য, রাস মেলাসহ এ জনপথের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রাজকন্যার মতো সৌন্দর্যের পশরা, যা পর্যটকদের মন ভরে উঠবে। দর্শনীয় স্থানগুলো দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভীড় বাড়ছেই।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত : পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের একটি স্থানের নাম কুয়াকাটা। এটি বঙ্গোপসাগরের তীরে একটি স্বাস্থ্যকর ও মনোমুগ্ধকর স্থান। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত যাওয়ার অপরূপ দৃশ্যাবলোকন করা যায়। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য ১৮ কি.মি. এবং প্রস্থ ৩.০৫ কি.মি.।
প্রাচীন কুয়া থেকে কুয়াকাটা : এক সময় কুয়াকাটায় বসবাসকারী রাখাইনরা তাদের পানীয় জলের প্রয়োজনে কুয়া বা কূপ খনন করে। স্মৃতি রয়েছে-এ কুয়া থেকেই এ এলাকার নামকরণ করা হয়েছে কুয়াকাটা। সে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকারি উদ্যোগে সমুদ্রে সৈকতের খুই নিকটে রাখাইন পল্লীতে কুয়া বা কূপ থেকে আজকে কুয়াকাটা নামকরণ করা হয়েছে।
গঙ্গামতির চর : কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে আনুমানিক ১০ কি.মি. পূর্ব দিকে গঙ্গামতির চর নামে একটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এ চরের মধ্যে রয়েছে স্বচ্ছ নীল জলধার। রয়েছে প্রকৃতির কারুকাজ খচিত বেলাভূমি। এই চরে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায় তাছাড়া ও এখানে একটা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাবেন।
লেমুর চর : কুয়াকাটা মূল ভূ-খণ্ডের পশ্চিম দিকে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দূরে নয়নাভিরাম একটি স্থান লেবুর চর। এখানে রয়েছে প্রায় ১ হাজার একর বনাঞ্চল। লোক মুখে শোনা যায়, এই লেবুর চরে গেলে দেখা মেলে অসংখ্য মৌসুমি চিংড়ি রেনু শিকারিদের এবং বনের ভেতর অসংখ্য মৌমাছি।
রাসমেলা : রাসমেলা হিন্দু নর-নারীদের একটি বিশেষ ধর্মীয় উৎসব প্রতি বছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমার তিথিতে এ উৎসব হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গঙ্গাস্নান করতে সমবেত হন হাজার হাজার হিন্দু নর-নারী।
শুঁটকি পল্লী : কুয়াকাটা থেকে পশ্চিম দিকে ৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত কুয়াকাটা শুঁটকি পল্লী। সারা বছর তবে শীতকালে জেলেরা সাগর থেকে বিভিন্ন্ প্রজাতির ছোট বড় মাছ ধরে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করে থাকে। এ শুঁটকি মাছের চালান দেশ বিদেশে পাঠিয়ে এ এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ীরা অর্জন করে কোটি কোটি টাকা।
কিভাবে আসবেন : ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৭০কি.মি.। ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলীর বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি আসতে পারেন কুয়াকাটা। সময় লাগবে থেকে ৯ ঘণ্টা। ঢাকা সদর ঘাট থেকে নির্ধারিত রুটে লঞ্চ যোগে পটুয়াখালী আসতে হবে। পটুয়াখালী-কুয়াকাটা রুটের বাসে চলে সোজা পৌঁছে যাবেন কুয়াকাটা। ঢাকা থেকে বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে সদর ঘাট থেকে ছেড়ে যাবে।
সম্প্রতি মহিপুর থানা পুলিশ পর্যটকদের হয়রানী করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশদের হয়রানী থেকে মুক্তি পেতে চায় পর্যটকরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com