চরফ্যাসন প্রতিবেদক ॥ চরফ্যাসনে স্ত্রী ইয়াছমিনের মৃত্যু ঘোষণা শুনে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে গেছেন স্বামী নাঈম হোসেন। রোববার বিকেল ৩টায় চরফ্যাসন উপজেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এই ঘটনা ঘটেছে। শশীভূষণ থানা পুলিশ লাশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ভোলা মর্গে পাঠিয়েছে।
চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অমিতাভ দে জানান, বিকেল ৩টায় গুরুতর অসুস্থ ইয়াছমিনকে (২৫) মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন স্বামী নাঈম হোসেন। ইয়াছমিন বিষপান করেছেন বলে নাঈম জানিয়েছিলো। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে রোগীনির মৃত্যুর বিষয়টি জানানোর পর পরই স্বামী নাঈম স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়ে যান। ওই চিকিৎসক জানান, ইয়াছমিনের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।
জরুরী বিভাগের কর্মরত সাব এ্যাসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহিদ হোসেন জানান, নাঈম ভাড়ায় চালিত এ্যাম্বুলেন্সের চালক এবং নিজের এ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস্থ স্ত্রীকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ।
শশীভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমেদ আলী জানান, ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি ঢাকার গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার বাশাইল গ্রামে। শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের শশীভূষণ গ্রামের মৃত ইদ্রিস মাঝি এবং স্কুল শিক্ষিকা নাজমা বেগমের ছেলে নাঈমের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়াছমিন। নাঈম সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। ইয়াছমিনও সৌদিতে প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসে থাকা কালে ইয়াছমিন এবং নাঈমের সাথে প্রেম-প্রণয় ঘটে। তিন বছর আগে সৌদি ছেড়ে নাঈম-ইয়াছমিন দেশে ফিরে বিয়ে করেন। তাদের এক বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ইয়াছমিনের ভাই কাতার প্রবাসী আল আমীন এবং বোন রহিমা বেগম দাবী করেন, বোনের সংসারে কলহ লেগেই ছিল। নিত্য কলহের জের ধরে নাঈম তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছেন বলেও তারা দাবী করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, নাঈমের বাবা ইদ্রিস মাঝির মৃত্যুর পর মা স্কুল শিক্ষিকা নাজমা বেগম আবুল বাসার নামের এক ব্যাক্তিকে বিয়ে করেন। নাজমাকে বিয়ে পর আবুল বাশার নিজেও দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ইয়াছমিনের মৃত্যুর দিন রোববার নাজমা তার স্বামী বাশারের সাথে ঢাকায় ছিলেন।
নাজমা বেগম শশীভূষণ গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া জমিতে ঘর করে সেখানেই বসবাস করতেন। মা নাজমার সাথে নাঈম স্ত্রী ইয়াছমিনকে নিয়ে ওই একই ঘরে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য কলহ ছিল। তবে রোববার দুপুরে বিষপান বা মৃত্যুর কারণ নিয়ে পাড়া প্রতিবেশীরা কিছু বুঝতে পারছেন না। ঘটনার পর থেকে কেউ আর ঘরে নেই। শশীভূষণ থানার অফিসার ইন-চার্জ মিজানুর রহমান পাটওয়ারী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়না তদন্তে পাঠানোর প্রস্ততি চলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com