ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে খুলবে অফিস। এ জন্য ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। ফেরার সময় যানজটের বিরম্বনায় না পড়লেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেছে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতিও। সরেজমিনে দেখা গেছে, পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আসার প্রায় সব বাসেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১০০-২০০ টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে। সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ীর ভাড়া ১৫০ টাকা হলেও ২৫০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছে।ব্যাংকের চাকরিজীবী ফারজানা করিম। ঈদ আনন্দ শেষে ঢাকায় ফিরছেন ফারজানা। তিনি বলেন, 'আমি ভাঙ্গা থেকে ঢাকা ফিরছি। ভাঙ্গা থেকে কোন গাড়িই ৩০০ টাকার কমে আনছে না।’ এসময় ভাড়ার নীতিমালা ও জবাবদিহি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ ব্যাংকার।
বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিকতা করেন আবদুল্লাহ মানুম। তিনি তিনদিনের ঈদের ছুটিতে এসেছিলেন গ্রামের বাড়িতে। আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছেন। তার সঙ্গে দেখা হয় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা নিরাপদ ও দুর্ভোগহীন হয়েছে আমাদের দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য। তবে, হতাশার কথা হলো পরিবহনগুলো যার কাছ থেকে যা তা ভাড়া নিচ্ছে। মানছে না যাত্রী ভাড়ার আইন বা বিধিনিষেধ। এক গাড়িতে যদি সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী ১৫০ টাকা হয়, অন্য গাড়িতে ২৫০-৩০০ টাকা কী করে হয়। এগুলো প্রশাসন তদারকি না করলে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন,পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে। এছাড়াও খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের বাসগুলো বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী বহন করলেও কোন কোন পথে যাত্রী সাধারণকে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশির দূরত্বের টিকিট কিনতে বাধ্য করছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, দিনমজুর এ ধরনের স্বল্প আয়ের মানুষজনকে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে।সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে এহেন ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক। ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ্ বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা ও যাত্রীদের হয়রানি বন্ধ করতে ঈদের আগেই পরিবহন অফিসগুলোতে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।গড়হারে সবাই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে না, কিছু অসৎ লোক সুযোগ বুঝে এ ভাড়া আদায় করছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বাস চালক-কন্টাক্টররা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুযোগ পাচ্ছে প্রশাসন ও পুলিশের তদারকিতে গাফিলতির জন্যে।’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মো. সেলিম রেজা। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরণের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবেএতে পুলিশের গাফিলতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশ যাত্রীদের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com