রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন: ২ হাজার ঘর পুড়ে ছাই, ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন প্রায় তিন ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
রোববার বেলা ৩টার দিকে বালুখালীর ১১ নম্বর ক্যাম্পের বি-ব্লকের একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন মুহূর্তের মধ্যে ৯, ১০, ১২ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে অন্তত ২ হাজার ঝুপড়ী ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ।
এ ছাড়াও আগুনে ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদানের লার্নিং সেন্টার ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে। রোহিঙ্গা বসতিগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো এবং ঘনবসতি হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা বলেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুনের সূত্রপাতের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এটি নির্ধারণে সময় লাগবে।
উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ পর্যন্ত ২ হাজারের কাছাকাছি ঘর পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিশ্চিত করে বলতে সময় লাগবে। এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
রোহিঙ্গাদের অভিযোগ ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আরসা সন্ত্রাসীরা এ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্যাম্পের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবলু কামাল, আবদুল গফুর ও শামসুল আলমসহ আরও কয়েকজন।
৮ এবিপিএনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, বেলা ৩টার দিকে হঠাৎ করে আগুন দেখা যায়। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ক্যাম্পের ঘরগুলো পাশাপাশি হওয়ায় আগুন ১২, ১১, ১০ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের সূত্রপাত কী কারণে তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সন্দেহজনক এক যুবককে আটক করেছে এপিবিএন ও পুলিশ। আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
এ অগ্নিকাণ্ডকে রহস্যময় উল্লেখ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কামিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ১৪-১৫ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোরকে দেশলাইসহ আটক করা হয়েছে। এই কিশোরকে ঘরে আগুন দিতে দেখেছেন অনেকে। তাকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে, এটি পরিকল্পিত বা নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড কি না।
তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, এর ওপর পাহাড়ের ঢালু এলাকায় যাতায়াত সীমিত হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকিও অনেক। লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তবে আগুনে প্রাণহানি হয়েছে কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে হাসপাতালে পাঠানোর খবর পেয়েছি।
প্রসঙ্গত ক্যাম্পে ২০২১ সালের ২২ মার্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১১ জন প্রাণ হারান, আহত হন পাঁচ শতাধিক। পুড়ে যায় ৯ হাজারের বেশি ঘর।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com