ইরানে ‘সন্ত্রাসী আস্তানা’গুলোর ওপর হামলা চালালো পাকিস্তান। দিন দুয়েক আগেই পাকিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালিয়েছিল তেহরান। তেহরানকে তার ভূখণ্ডে বেলুচি গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের সদর দপ্তরে হামলার জন্য ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করার একদিন পরে এই বদলা নিলো ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘মার্গ বার সরমাচার’ নামক গোয়েন্দা ভিত্তিক অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে ইরানি মিডিয়া জানিয়েছে যে, হামলায় ৪ শিশুসহ ৭ জন নিহত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আজ সকালে পাকিস্তান ইরানের সিস্তান ওবেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী আস্তানাগুলির বিরুদ্ধে অত্যন্ত সমন্বিত এবং বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত সামরিক হামলা চালিয়েছে। ইরানকে ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশ’ বলে অভিহিত করে ইসলামাবাদ বলেছে যে এই পদক্ষেপটি সমস্ত হুমকির বিরুদ্ধে তার জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য ‘পাকিস্তানের অদম্য সংকল্পের বহিঃপ্রকাশ।’
মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসলামাবাদ ইরানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করে। এই হামলার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের নিজস্ব নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থের অনুসরণ করা যার সঙ্গে আপস করা যায় না। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে, ইরানের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার মধ্যে, পাকিস্তান ক্রমাগতভাবে ইরানের অভ্যন্তরে অনিয়ন্ত্রিত স্থানগুলিতে নিজেদেরকে ‘সরমাচার’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় এবং অভয়ারণ্যের বিষয়ে তার গুরুতর উদ্বেগ শেয়ার করেছে।
পাকিস্তান আরও বলেছে যে, তারা এই সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি এবং কার্যকলাপের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ শেয়ার করেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, এই তথাকথিত সরমাচাররা দায়মুক্তিসহ নিরপরাধ পাকিস্তানিদের রক্ত ঝরাতে থাকে। এই তথাকথিত সরমাচারদের আসন্ন বড় আকারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গতকাল সকালে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল।
এর আগে মঙ্গলবার, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জইশ আল-আদলের দুটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
ইরানের তার আকাশসীমা লঙ্ঘনের নিন্দা করে পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশকে সেদিনই সতর্ক করে বলেছিল যে, এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ‘গুরুতর পরিণতি’ হতে পারে। হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে- ‘ইরানের দ্বারা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের অপ্রীতিকর এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির লঙ্ঘন। এই বেআইনি কাজটি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
জইশ আল-আদলকে ইরান একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে কালো তালিকাভুক্ত করে যা ২০১২ সালে গঠিত হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরাইল সংঘর্ষ এবং লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলার মধ্যে ইরান পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে এবং ইসলামাবাদও তার জবাব দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com