চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী যেন নিয়ম মাফিক চলছেন। কিছু দিন পরপরই একে অপরকে খোঁচা দিচ্ছেন, ঝাঁজালো জবাবে গরম করছেন সোশাল মিডিয়া। আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
একটি গণমাধ্যমে বুবলীকে ইঙ্গিত করে অপু বিশ্বাস বলেছেন, ‘উনি যা যা করছেন বা করেন, তা তো আমার সন্তান দেখছেন। আমার সন্তানের তো বোঝার বয়স হয়ে গেছে। এখন জয়ের বয়সীরা অনলাইনে লেখাপড়া করে। আমি নাম বলবো না, একজন তো একটা ভিডিও ছেড়েছেন। জয়ও সেই ভিডিও দেখেছে। সুতরাং এসব ভিডিওতে তার ওপরও তো প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু আমি তো সেই কাজটি করবো না। আমি আমার সন্তানকে সঠিক পথে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো।’
পারিবারিক শিক্ষার বিষয়ে অপুর মন্তব্য, ‘আমি মনে করি, আমার পারিবারিক শিক্ষা মানুষকে সম্মান দেওয়া, ক্ষতি করা নয় এবং আমি সেটা করার চেষ্টা করি। কে কাকে ছোট করছে, সেই বোধবুদ্ধি আমার আছে। আমি অনেক দিন থেকেই এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়া এড়িয়ে চলতে চেয়েছি। কিন্তু সিনেমার মানুষ হওয়ায় মিডিয়ার সামনে কথা বলতে গিয়ে টুকটাক তা সামনে চলে আসে।’
অপুর এমন বক্তব্যের পর চুপ থাকতে পারলেন না বুবলীও। রীতিমতো বিস্ফোরিত হলেন তিনি। সোশাল হ্যান্ডেলে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে বলেছেন অনেক কথা। যদিও কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে কারও বিন্দুমাত্র কষ্ট হচ্ছে না।
শুরুতেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বুবলী। তার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘আমি একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কারও নোংরা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে আমাকে নিয়ে বা আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কেউ কোনও বেফাঁস মন্তব্য করলে বা কোনও ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার চেষ্টা করলে, তার বা তাদের বিরুদ্ধে আমি দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কারণ, আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিছু দিন পর পর যে ব্যক্তি এসব নোংরা খেলা শুরু করে বা যাদের দিয়ে করায়, তাদের সমস্ত কিছু সোশাল মিডিয়া, পত্রিকা এবং ইউটিউবে রয়েছে; যা ডকুমেন্ট হিসেবে যথেষ্ট এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
ক্ষুব্ধ সুরে বুবলী বলেন, ‘এসব নোংরামি পাত্তা দেওয়ার রুচি থাকে না বলেই এসব নিয়ে আমার কথা বলা হয় না। কিন্তু চুপ থাকাকে যদি সে বা তারা সুযোগ পাওয়া মনে করে, তাহলে তা হবে তাদের চরম ভুল। আশপাশে হাজার কিছু হলেও দিনশেষে আমাকে নিয়েই এসব ব্যক্তির ব্যস্ততা। এমনকি নাওয়া-খাওয়া সব থাকে আমার চিন্তায়। এদেরকে রেসপন্স করতেও রুচিতে বাঁধে!’
পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে অপুর খোঁচার বিপরীতে বুবলীর কড়া জবাব, ‘আমার পারিবারিক শিক্ষা আমাকে কখনোই দুমুখো সাপের আচরণ করতে শেখায়নি, সুবিধাবাদী হতে শেখায়নি, ধর্ম নিয়ে একেকবার একেক মিথ্যা কথা বলে সাধারণ জনগণের আবেগ নিয়ে খেলা করে বোকা বানাতে শেখায়নি, গিরগিটির মতো রঙ বদলাতে শেখায়নি, কাউকে ছুরি মেরে পরক্ষণেই নিজের কোনও সুবিধা হবে ভেবে সেই ছুরি মারা জায়গায় ব্যান্ডেজ করতে শেখায়নি, বিভিন্ন মানুষকে নিয়ে নানান টকশোতে অপমান করে কথা বলে নির্লজ্জের মতো হাসতে শেখায়নি, মানুষকে অসম্মান করতে শেখায়নি, হিংসা শেখায়নি, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিতে শেখায়নি, কাউকে নানান অপমান করে আবার নিজের স্বার্থে সময় বুঝে প্রশংসা করতে করতে মুখে ফেনা তুলতে শেখায়নি, বাস্তব জীবনেও অভিনয় করতে শেখায়নি। তাই আমি হয়তো আপনাদের অনেকের সাথে ইনিয়ে-বিনিয়ে নাটক করতে পারি না।
এসব শিখতে না পারার জন্য নিজেকে গর্বিত মনে করেন বুবলী। তার ভাষ্য, ‘আমি এসব না শিখতে পারার জন্য গর্বিত। কারণ, এসব যে পারে, সে অনায়েসেই লিজেন্ড শাবানা ম্যামের মতো এত সিনিয়র ব্যক্তিত্ব নিয়ে অপমানজনক বেফাঁস মন্তব্য করে বসতে পারে, কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মতো এগিয়ে যাওয়া নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে অপমান করে কথা বলে মুখটাকে বিশ্রী করে ব্যঙ্গ করতে পারে, ভালো মনের মানুষ বর্ষা আপুকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলতে পারে, মাস্টারমেকার পরিচালক শ্রদ্ধেয় মালেক আফসারী স্যারকে নিয়ে অপমান করে কথা বলতে পারে; যা কিনা রীতিমতো তার পারিবারিক শিক্ষাকেই উপস্থাপন করে। এজন্যই বলে- ব্যবহারই বংশের পরিচয়।’
বুবলীর অভিযোগ, তার সন্তান শেহজাদ খান বীরকে নিয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ কটূক্তি করেছেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘কত বাজে, নিচু মানসিকতার হলে সে এক নিষ্পাপ বাচ্চাকেও কটূক্তি করতে ছাড়েনি। কিছু দিন আগে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে আমার সন্তানের গেটআপ নিয়ে ক্যামেরার সামনে বানরের মতো মুখ ভেংচি কেটে বাজে মন্তব্য করতে ছাড়েনি।’
সন্তানের ভালোর জন্য কী করবেন, সেটা একান্তই নিজের ব্যাপার বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন বুবলী।
অপুকে উদ্দেশ করে বুবলী আরও বলেন, ‘সারাক্ষণ নানান মিথ্যা, বানোয়াট, উসকানিমূলক ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে; অথচ পরে আবার বলবে, সে ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে না। সারাক্ষণ মানুষকে ছোট করে কথা বলবে, কিন্তু পরে বলবে, সে মানুষকে ছোট করে কথা বলে না! কী অদ্ভুত! একেক সময় একেক রঙ ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার নগ্ন খেলা এসব বহুরূপী নিচু মানসিকতার ব্যক্তিই পারে। লজ্জা!’
উল্লেখ্য, অপু বিশ্বাস ও বুবলীর মধ্যকার এই অন্তর্জাল যুদ্ধের মূল কারণ, তারা দুজনই নায়ক শাকিব খানের ঘর করেছেন। এরমধ্যে অপুর সঙ্গে ২০১৮ সালে শাকিবের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। ওই বছরই বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব। দুই সংসারে শাকিবের দুই পুত্র রয়েছে। অপুর ঘরে আব্রাহাম খান জয়, বুবলীর ঘরে শেহজাদ খান বীর।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com