প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় এবার প্রতিবাদ জানালেন ঢালিউড কিংখান খ্যাত অভিনেতা শাকিব খান। আজ বুধবার তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন। দেশের স্বার্থে সৎ সাংবাদিকতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে এমন ঘটনায় বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নিয়েও তিনি চিন্তিত।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে রোজিনা ইসলামকে সেখানে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। সেদিন রাতে তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মধ্যরাতে দেওয়া হয় মামলা। গতকাল ১৮ মে শাহবাগ থানা থেকে তাঁকে আদালতে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুরে কারাগারে নেওয়া হয়।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা নজরে এসেছে বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় তারকার। শাকিব খান লিখেছেন, ‘দুদিন ধরে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের কয়েকটি স্থিরচিত্র দেখছি আর বিস্মিত হচ্ছি। দেশ ও বিশ্ব গণমাধ্যমে তাঁকে ঘিরে তৈরি প্রতিবেদনগুলো পড়ছি আর ভাবছি, আমার সোনার বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!’
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, ওয়াশিংটন পোস্ট, আল জাজিরা, দ্য হিন্দু, স্ট্রেইটস টাইমস, এবিসি নিউজ, বার্তা সংস্থা এএফপিসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে। এই সংবাদমাধ্যমগুলো সৎ সাংবাদিকতায় উৎসাহিত করেছে। শাকিব খান লিখেছেন, ‘একজন সৎ সংবাদকর্মী তো কখনোই রাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ নন। বরং তিনি সমাজ তথা দেশের দর্পণ হিসেবে কাজ করেন। দেশের উজ্জ্বলতম অনুসন্ধানী সাংবাদিকের এমন দশায় উদ্বিগ্ন হই, মনটা ভারাক্রান্ত হয়। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা করে রোজিনা ইসলাম দেশে ও দেশের বাইরে থেকে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। এ পর্যন্ত তিনি যেসব অসংগতি, দুর্নীতি জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন, সেগুলোর সবই কাঠখড় পুড়িয়ে বের করে আনা তথ্য; যা বস্তুনিষ্ঠ এবং জনগণের মঙ্গলময়।’
সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন চলচ্চিত্র ও নাট্য অঙ্গনের অনেকেই। এই প্রসঙ্গে শাকিব খান লিখেছেন, ‘সুসাংবাদিকতা করতে গিয়ে রোজিনা ইসলাম যেভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তা মোটেও কাম্য নয়। এতে করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথকে সংকুচিত করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে রোজিনা ইসলাম যেন শতভাগ ন্যায়বিচার পান, সেই কামনা করছি।’
টেলিভিশনের ১৫টি সংগঠন ছাড়াও রোজিনার মুক্তি ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি চেয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ চারু শিল্পী সংসদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতিসহ আরও অনেক সংগঠন আলাদা বিবৃতি দিয়েছে।