রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের আগ্রাসনে নানা প্রজাতির দেশী মাছ বিলুপ্তির পথে
প্রকাশ: ৬ জুন, ২০২০, ৪:১৯ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
সাব্বির আলম বাবুঃ
মাছে-ভাতে বাঙ্গালীরা যখন ক্লান্ত দুপুরে বেলা পরিশ্রম করে ক্ষুধার্থ বাড়ী এসে ধোঁয়া উঠা এক প্লেট গরম ভাতের সাথে দেশী শিং-মাগুর মাছের ঝোল অথবা বোয়াল মাছের পেটি অথবা পাবদা মাছের দোঁ-পেয়াজার কথা ভাবলে এমন কোন বাঙ্গালী নেই যে জ্বিভে পানি আসবেনা। চিরায়ত আবহমান কালের গ্রাম বাংলায় দেশী জাতের নানারকম বাহারী মাছ যাদের স্থানীয় ভাষায় (জিয়ল) মাছ বলা হয় তাদের কদর সব সময়ই ছিল। পুটি, শিং, মাগুর, বোয়াল, টাকি, শোল, গজার, কালিয়ারা, কৈ, বাইন ইত্যাদি দেশী জাতের মাছ আকার-আকৃতি এবং স্বাদে স্বতন্ত্র আর অবশ্যই বিদেশী ও হাইব্রীড যে কোন মাছের চেয়ে অনেক গুন বেশী। দাদা-দাদী, নানা-নানীর মুখে এক সময়ে তাদের বড় বড় দেশী মাছ ধরা ও খাওয়ার গল্প শুনতে শুনতে আমরা ভালো লাগার আমেজে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতাম। আর বর্তমানে ধান ক্ষেত, শাক-সবজি ক্ষেত থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেতে যত্রতত্র অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে সেগুলো পানির সাথে মিশে খাল-বিল-নদী-নালা-পুকুরে গিয়ে দেশী মাছের উৎপাদন স্থল ধ্বংস করে দিচ্ছে। যার কারনে আমরা দেশী মাছ পাওয়া ও তার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি পাশাপাশি দেশী মাছের প্রজাতি চিরতরে বিলীন হচ্ছে। স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন প্রজাতির হাইব্রীড মাছ বাজারে পাওয়া গেলেও স্বাস্থ্য ও পুস্টিবীদদের মতে সেগুলোর পুস্টিমান সীমিত এবং স্বাদও তেমন নেই উপরোন্তু নানা ঔষধের দ্বারা উৎপাদিত বিধায় সেগুলো খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা নানা রোগের উপসম দেখা দিতে পারে। সর্বোপরি মাছে-ভাতে বাঙ্গালীর কাছে দেশী মাছের চাহিদা এবং কদর সব সময়ই বেশী তাই সরকারী ও বেসরকারী ভাবে দেশী জাতের মাছের সংরক্ষন করার উপর জোর দিয়েছেন সমাজের সুশীল মহল। তাহলেই টিকে থাকবে দেশী মাছ ও জুটবে দেশের আমিষের যোগান।